নিজস্ব প্রতিনিধি দৈনিক জামালপুর বার্তা : গতকাল সোমবার ছিল আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ দিবস।
সেই দিবসেও জামালপুরে তিতপল্লায় যৌতুক না দিতে পারায় মোছাঃ ছাদিয়া আক্তার ভাবনা (২১) নামে এক গৃহবধু স্বামী ও তার পরিবার কর্তৃক নির্যাতিত হয়েছে।
সাদিয়া জামালপুর পৌরশহরের ভেলা পিঙ্গল হাটি গ্রামের সাইফুল ইসলাম বাচ্চুর কন্যা। সাদিয়া পারিবারিক সিদ্ধান্তে জামালপুর সদর উপজেলার তিতপল্লা ইউনয়নের বাসিন্দা মৃত- আব্দুল হোসেনের পুত্র আমজাদ হোসেন পিয়াসের সাথে ১১ মাস পূর্বে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়।
গতকাল সোমবার সকাল ১০ টায় যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় সাদিয়াকে তার স্বামী পিয়াস নির্যাতন চালায়।
এক প্রশ্নের জবাবে ভোক্তভোগী গৃহবধু সাদিয়া আক্তার ভাবনা অভিযোগ করে জানান, তার স্বামী পিয়াস গতকাল সকালে যৌতুকের টাকা না পেয়ে হঠাৎ চড়াও হয় তার প্রতি।
তার স্বামী প্রথমে টাকা না পেয়ে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ শুরু করে। ঘটনার এক পর্যায়ে আমার স্বামী পিয়াস আমাকে মাথাসহ শরীরের ভিবিন্ন স্থানে আঘাত করতে থাকে এবং সিগারেটের আগুনে শরীরের বিভিন্ন স্থান পুড়িদেয়।
এক পর্যায়ে আমার গলায় ফাঁসি দিয়ে আমার শ্বাসরোধের চেষ্টা করে। এমন সময় আমার ডাক চিৎকারে স্থানীয়রা এসে আমার অবস্থা খারাপ দেখে ৯৯৯ নাম্বারে ফোন করেন।
দীর্ঘ সময় পরে পুলিশ আসে। পরে স্থানীয়রা এবং আমার পরিবারের লোকজন আমাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে আসে। সাদিয়া আক্তার ভাবনা বর্তমানে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের ৩য় তলা মহিলা ওয়ার্ডে ২ নং বেডে চিকিৎসাধিন রয়েছে।
সাদিয়া আরও বলেন, আমার স্বামী আমাকে বিবাহ করার ২ বছর আগে আরেক নারীকে বিবাহ করেছিল। তার আগের স্ত্রী তিতপল্লা কাষ্টসিংগ গ্রামের ছামাদ মোল্লার মেয়ে সুমা খাতুন।
পিয়াস তার আগের বৌয়ের সাথে কিছুদিন ঘর সংসার করে তাকে তালাক দেয়। তার আগের বিবাহের ঘটনা গোপন রেখে আমাকে বিবাহ করে। আমরা আর্থিক ভাবে অনেক গরিব।
তারা আমাদের থেকে অনেকটাই ধনি বলে আমার পিতা-মাতা বিবাহ দেওয়ার সময় আমার স্বামীর বিষয়ে তেমন কোন তথ্য না নিয়ে তার সাথে বিবাহ দিয়ে দেয়।
আমাকে বিবাহ করার কিছুদিন পর থেকেই আমার স্বামী যৌতুকের টাকা চাইতে থাকে। আমার পরিবার আমার স্বামীকে টাকা দিতে না পারায় প্রতিনিয়ত সে আমার সাথে খারাপ আচরণ করতে থাকে এবং তার আগের বৌয়ের উদাহারণ দেয়।
আমি যদি টাকা দিতে না পারি তাহলে প্রয়োজনে সে তার আগের বৌকে বাড়ীতে আনবে বলে আমাকে হুমকি দেয় এবং আমার কাছে প্রতিনিয়ত টাকা দাবি করতে থাকে।
এই ঘটনার জেরে এক পর্যায়ে সে কালকে আমার ওপর চাড়াও হয় এবং আমাকে নির্যাতন করে। আমি তার নির্যাতন থেকে বাচঁতে চাই এবং তার শাস্তির দাবি জানিয়েছে।
ঘটনার পর সাদিয়ার পরিবার এখনো আইনের আশ্রয় নেয়নি।
চিকিৎসা শেষে সুবিচারের আশায় তারা আইনের আশ্রয় নিবে বলেন জানান সাদিয়া ও তার পরিবার।
এই ঘটনায় সাদিয়ার স্বামীর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার কোন খোজ পাওয়া যায়নি।