ডেক্স রিপোর্ট দৈনিক জামালপুর বার্তা: জুলাই বিপ্লব কেবল একটি আন্দোলন নয়; এটি বৈষম্যের বিরুদ্ধে জনগণের মধ্যে নতুন করে সচেতনতা ও প্রতিরোধের বীজ বুনেছিল। দেশপ্রেমে অনুপ্রাণিত হয়ে, ধর্ম, বর্ণ কিংবা রাজনৈতিক দল নির্বিশেষে মানুষ এই সংগ্রামে একত্রিত হয় এবং সমাজে নতুন আশার আলো জ্বালে।
আর এই জুলাই বিপ্লবের সংগ্রাম স্মরণ করতে, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) বর্ষপঞ্জিকার প্রতিটি পাতায় স্থান পেয়েছে ৩৬ শে জুলাইয়ের বিভিন্ন সময়, আবু সাঈদ – মুগ্ধ সহ অনেককে নিয়ে স্মৃতি।
বর্ষপঞ্জিকার শুরুর পাতায় তুলে ধরা হয়েছে জুলাই বিপ্লবের শুরুর সংগ্রাম এবং শেষ করা হয়েছে স্বাধীনতার সূর্যোদয়ের চিত্র দিয়ে। সেখানে আছে শিক্ষার্থীদের ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের চিত্র, প্রতিবাদী চেতনার উন্মোচন, সারাদেশের দেয়াল আঁকন থেকে কিছু সেরা চিত্র স্থান পেয়েছে বর্ষপঞ্জিকায়। আরও আছে নারী শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ।
বুক ভরা সাহস ও প্রাণ ভরা দেশপ্রেম নিয়ে চলেছে সংগ্রামের ৩৬ দিন। পাড়া-মহল্লা থেকে শুরু করে দেশের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে চলেছে শিক্ষার্থীদের সংগ্রাম। বিভিন্ন মিডিয়াতে প্রচারিত হয়েছে সেই সংগ্রামের চিত্রগুলো। ঢাকার মেট্রোরেল, ফ্লাইওভার, ব্রিজ ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দেয়ালে গ্রাফিতি করেছিল শিক্ষার্থীরা।
ক্যালেন্ডারের মে মাসে/ বৈশাখ – জ্যৈষ্ঠের পাতায় রয়েছে শহীদ মুগ্ধর গ্রাফিটির চিত্র যেখানে লেখা ‘পানি লাগবে কারো? পানি, পানি, পানি’। পরের পাতায় রয়েছে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার চিত্র। সাথেই রয়েছে পুলিশের গাড়িতে শিক্ষার্থীর লাশ ঝুলানোর চিত্র। জুলাই মাসের পাতায় রয়েছে রিকশায় করে শিক্ষার্থীর লাশ নেওয়ার চিত্র।
বিপরীতে রয়েছে শরীরে শিহরণ জাগানো শহীদ আবু সাঈদের সেই ‘বুকের ভেতর অনেক ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর’ ভঙ্গিমার গ্রাফিতি।
আর আগস্টের পাতায় রয়েছে ৫ আগস্টের সেরা ছবিটি। ২৪শের স্বাধীনতার অর্জনে সেদিন বেরিয়ে এসেছিল ছাত্র-জনতা এবং পেশাজীবিবৃন্দরা।
বাকৃবির জনসংযোগ ও প্রকাশনা দফতরের পরিচালক মোহাম্মদ তৌফিকুল ইসলাম জানান, ‘২০২৪ এর জুলাই বিপ্লব বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ও স্মরণীয় অধ্যায়।
এই বিপ্লবে শিক্ষার্থীরা প্রমাণ করেছে যে ঐক্য ও সাহসিক সংগ্রাম দিয়ে পুরো দেশকে বদলে দেয়া সম্ভব। অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ ময়মনসিংহের ছাত্র-জনতা এবং পেশাজীবিবৃন্দ এই আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
লাখো শহীদের ত্যাগ ও বীরত্বগাঁথা এক ফ্রেমে তুলে ধরা কখনোই সম্ভব নয়। তবুও, আমরা চেষ্টা করেছি জুলাই বিপ্লবের স্মরণীয় ঘটনাগুলোকে একটি ক্যালেন্ডারের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতে, যাতে পুরো বছরটি জুড়ে জুলাই বিপ্লব মানুষের স্মৃতিতে গেঁথে থাকে।’