ইমরান সরকার স্টাফ রিপোর্টার বকশিগঞ্জ : জামালপুরের বকশীগঞ্জে পারিবারিক কলহের জেরে এক ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে। ঘুমন্ত অবস্থায় প্রথম স্ত্রীকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে গেছেন দ্বিতীয় স্ত্রী।
এই ঘটনায় গুরুতর আহত প্রথম স্ত্রী শিরিনা বেগম (৩০) বর্তমানে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে গত সোমবার (২১ জুলাই) দিবাগত রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার কামালপুর ইউনিয়নের ধানুয়া গ্রামে।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন রাতে স্বামী আনোয়ার হোসেনের দুই স্ত্রী মোছাঃ শিরিনা বেগম এবং মোছাঃ শান্তি বেগম খাবার খেয়ে একই ঘরে শুয়ে ছিলেন।
আনুমানিক রাত সাড়ে ১২টার দিকে আনোয়ার হোসেনের দ্বিতীয় স্ত্রী মোছাঃ শান্তি বেগম ঘুমন্ত অবস্থায় তার প্রথম স্ত্রী শিরিনা বেগমকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করেন এবং দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান।
চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে এসে রক্তাক্ত অবস্থায় মোছাঃ শিরিনা বেগমকে মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন। পরবর্তীতে ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ মোর্শেদ আলি ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় শিরিনা বেগমকে বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।
সেখানে তার অবস্থার অবনতি দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাৎক্ষণিকভাবে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে শিরিনা বেগমের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
জানা গেছে, স্বামী আনোয়ার হোসেন আনুমানিক পাঁচ বছর আগে তার প্রথম স্ত্রী শিরিনা বেগম এবং চার সন্তানকে রেখে একই গ্রামের আব্দুল আহাদ ওরফে লাল শিয়ালের মেয়ে শান্তিকে নিয়ে পালিয়ে বিয়ে করেন।
দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে দীর্ঘদিন তিনি ঢাকায় আত্মগোপনে ছিলেন। এই সময়ে প্রথম স্ত্রী শিরিনা বেগম শাশুড়ি ও সন্তানদের নিয়ে মানুষের বাড়িতে কাজ করে অত্যন্ত কষ্টে ছোট্ট একটি ঘরে বসবাস করতেন।
দীর্ঘদিন পর দ্বিতীয় স্ত্রী শান্তি বেগম স্বামীর বাড়িতে ফিরে আসেন। এরপর থেকেই প্রথম স্ত্রীকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া এবং পারিবারিক আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই সতীনের মধ্যে প্রায়শই ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকত।
ঘটনার আগেরদিনও প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় স্ত্রীর তীব্র ঝগড়া হয় বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। স্থানীয়দের তথ্যমতে, এই পারিবারিক কলহের জের ধরেই এমন নৃশংস ঘটনা ঘটেছে।
এ বিষয়ে বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার শাকের আহমেদ বলেন, “ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে আমরা অবগত আছি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।