ইমরান সরকার স্টাফ রিপোর্টার : জামালপুরের বকশীগঞ্জে উলফাতুননেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এক ছাত্রী ছয়তলা ভবন থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টার পর বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে অপসারণ করা হয়েছে। এই ঘটনা স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার বিষয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে এবং অভিভাবক ও সচেতন মহল ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে।
গত বুধবার, ২৩ জুলাই, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশে উলফাতুননেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নূর মোহাম্মদকে তার পদ থেকে অপসারণ করা হয়। একই দিনে বিপ্লব কিশোর চট্টোপাধ্যায়কে বিদ্যালয়ের নতুন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এই অপসারণের ঘটনাটি ঘটে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী সাথী আক্তার (আলো) গত ২১ জুলাই বিদ্যালয়ের ছয়তলা ভবন থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করার পর। গুরুতর আহত অবস্থায় সাথী আক্তার বর্তমানে ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর)-এ আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে।
সাথী আক্তারের আত্মহত্যার চেষ্টার পরপরই শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তারা ঘটনার জন্য সরাসরি তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নূর মোহাম্মদকে দায়ী করেন। অভিভাবকদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষকের মানসিক চাপ এবং হয়রানির কারণেই সাথী আক্তার এমন চরম পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছে।
ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং নূর মোহাম্মদকে অপসারণের নির্দেশ দেয়। শিক্ষা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে তারা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা এবং বিদ্যালয়ে একটি সুস্থ ও সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করছে।
তবে, কেবল প্রধান শিক্ষকের অপসারণই যথেষ্ট নয় বলে মনে করছেন অভিভাবক ও সচেতন মহল। তারা এই ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে জড়িত সকল দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। তাদের মতে, এমন ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে আর না ঘটে, সেজন্য দায়ীদের জবাবদিহি নিশ্চিত করা জরুরি।
নবনিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিপ্লব কিশোর চট্টোপাধ্যায় দায়িত্ব গ্রহণের পর বিদ্যালয়ে স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার এবং শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।