বকশীগঞ্জে জিয়া পরিবারের ছবি অবমাননাকে কেন্দ্র করে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন

doinikjamalpurbarta

ইমরান সরকার বকশীগঞ্জ প্রতিনিধি : গত ৩০ মে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪ শাহাদাত বার্ষিকী উদযাপনের দিনে জিয়া পরিবার ছবি ও ব্যানার অবমাননা কে কেন্দ্র করে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেছে বকশীগঞ্জ বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।

গত ৩০ মে (শুক্রবার) রাতে বকশীগঞ্জ বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান মিলন তার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বলেন তাকে পরিকল্পিতভাবে আওয়ামী লীগের দোসর বলা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্মানহানিকর কুরুচিপূর্ণ ভিডিও বক্তব্যে অপপ্রচার করা হচ্ছে।

এ সময় তিনি আরও বলেন যে ছবিগুলোর জন্য আমার বিরুদ্ধে বিপ্লব সওদাগর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও বক্তব্য দিয়েছেন সেই ছবিগুলো অক্ষত অবস্থায় টেবিলের উপর রাখা ছিল। যার ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপনারা দেখেছেন।

আমি দীর্ঘ আট মাস যাবত বকশীগঞ্জ বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছি। আমার কমিটির সভাপতি বিপ্লব সওদাগর।

তিনি বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি হওয়ার পর থেকেই তার নিজ ইচ্ছামত সংগঠন পরিচালনা করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন।

বিভিন্ন সাংগঠনিক ইস্যুতে তার সঙ্গে আমার একটা দূরত্ব তৈরি হয় আর এ দূরত্বের উপর ভিত্তি করেই আমার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কুরুচিপূর্ণ ভিডিও বক্তব্য প্রদান করেন।

আমাদের কমিটি হওয়ার পর মালিক সমিতির বসার কোন কার্যালয় ছিল না। আমি আমার ঘরটি দিয়েছিলাম মালিক সমিতির অফিসের কাজে ব্যবহারের জন্য।

এখন আমার ব্যক্তিগত কাজে আমার ঘরটি ফেরত নেওয়ার প্রয়োজন হয়েছে বিধায় সভাপতিকে অবগত করে আমি আমার ঘরটিতে ডেকোরেশন এবং রং করার প্রস্তুতি গ্রহণ করি।

কার্যালয়ে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ছবি, বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ছবি, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি ও আমাদের সাংসদ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত সাহেবের ছবি ছিল।

রংগের ছিটেফুটোয় যাতে ছবিগুলো নষ্ট না হয় সেজন্য আমার কর্মচারী ছবিগুলো যত্নের সহিত খুলে আমার জয়েন্ট সেক্রেটারি আমিনুল ইসলামের কাউন্টারে স্ব-সম্মানে রেখে দেয়।

আমার সভাপতি বিপ্লব সওদাগর আমার উপর আক্রোশের কারণে এবং প্রতিশোধ নেওয়ার কারণেই সেই ছবিগুলো মাটিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছবি তুলে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য আমার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা ও বানোয়াট অপপ্রচার মূলক ভিডিও বক্তব্য প্রদান করে।

তিনি আরো বলেন বর্তমান সভাপতির কোন পরিবহন ব্যবসা নাই।

আমার গাড়ি তার নামে নিয়ে সে মালিক সমিতির সভাপতি হয়েছে। আমি পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হয়েছি ৫ আগস্টের পরে সেটা জননেতা এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত সাহেবের সুপারিশ ও জেলা বাস মালিক সমিতির অনুমতি ক্রমে। বিপ্লব সওদাগরের ভিডিও বক্তব্যে পরিকল্পিতভাবে আমাকে আওয়ামী লীগের দোসর বলা হচ্ছে।

আমি হলফ করে বলতে পারি আমি কোনদিন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলাম না আর আমি যদি আওয়ামী লীগ করতাম তাহলে ৫ তারিখের পরে নতুন কমিটিতে আমি সাধারণ সম্পাদক হতে পারতাম না।

বিপ্লব সওদাগর বর্তমানে তার লোকজন দিয়ে আমার যে ব্যবসায়িক কাউন্টার সেটা বন্ধ করে রেখেছে।

তিনি যে এ ধরনের কার্যকলাপ করেছে ব্যক্তি স্বার্থে জিয়া পরিবারের ছবি অবমাননা করে সেটার দায় আমার উপর চাপিয়ে দেয়ার যে চক্রান্ত করছে আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং আমি প্রশাসনের কাছে বিনীত অনুরোধ করছি সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে যারা ব্যক্তি স্বার্থে এরকম হীন কাজ করতে পারে তাদের বিরুদ্ধে যেন সঠিক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

এ সময় তিনি দেওয়ানগঞ্জ বকশীগঞ্জ আসনের সাবেক সাংসদ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত এর কাছে বিচার প্রার্থনা করেন।

এদিকে বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান মিলন এমন বিবৃতির প্রতিবাদের ৩১ মে (শনিবার) বিকাল ৫.০০ ঘটিকায় সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি আবদুল্লাহ সওদাগর বিপ্লব।

তিনি বলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪ তম শাহাদাত বার্ষিকীতে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ছবি, বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ছবি, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি ও দেওয়ানগঞ্জ-বকশীগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত এর ছবি ও ব্যানারের অবমাননা করে মাহমুদুল হাসান মিলন।
তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন।

তার স্ত্রী বিসিএস ক্যাডার ভুক্ত একজন অফিসার। স্ত্রীর কল্যাণে তিনি এখন শত কোটি টাকার মালিক। বর্তমানে মিলনের নামে ৯টি বাস ও ২টি প্রাইভেট কার রয়েছে।

ঢাকায় ৩টি আলিশান ফ্যাট ও বকশীগঞ্জ পৌর এলাকায় টিকরকান্দিতে বিলাশ বহুল বাড়ী ও অনেক জায়গা জমির মালিক হয়েছেন। বিপ্লব সওদাগর আরো বলেন দূর্নীতিবাজ মিলন ও আমিনুলকে দ্রুত গ্রেফতার করা না হলে দলীয় নেতা কর্মীদের সাথে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন করা হবে।

এ দিকে এমন ঘটনায় বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খন্দকার শাকের আহমেদ জানান, এ ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

SHARES

ফেসবুকে অনুসরণ করুন

আরো পোস্টঃ