শেরপুর জেলা প্রতিনিধি: শেরপুরে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্যের বাজার পরিস্থিতি ও সাপ্লাই চেইন তদারকিতে গঠিত বিশেষ টাস্কফোর্স কমিটির সদস্যবৃন্দের নিয়মিত বাজার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২৮ অক্টোবর (সোমবার) সদর উপজেলার ব্রীজপাড় ও নয়ানী বাজার এলাকায় বিশেষ টাস্কফোর্স কমিটি বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সরেজমিনে পরিদর্শন করেন।
তদারকিকালে চাল, ডাল, ডিম, কাঁচা মরিচ, তেল, পেঁয়াজ, সবজি, মাছ বাজার, মাংসের দোকান, আলুসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির পাইকারি ও খুচরা মূল্য যাচাই করা হয় এবং ব্যবসায়ীদের যৌক্তিক মুনাফায় বিক্রির জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়। এছাড়াও ব্যবসায়ীদের মজুদদারির বিষয়ে কঠোরভাবে সতর্ক করা হয়। তাছাড়া নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের উৎপাদন, পাইকারি ও ভোক্তা পর্যায়ে যাতে ন্যূনতম দামের পার্থক্য থাকে এবং দ্রব্যাদির মূল্য তালিকা প্রদর্শনের বিষয়ে ”বিশেষ টাস্কফোর্স” সার্বিকভাবে ব্যবসায়ীদের নির্দেশনা প্রদান করে।
তদারকিকালে দেখা যায়, শেরপুর জেলায় নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর বাজার পরিস্থিতি ও সাপ্লাই চেইন স্বাভাবিক রয়েছে। এসময় ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন বিষয়ে সচেতন করা হয়। এদিন খুচরা বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্যের মূল্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, লাল ডিম (ডজন)- ক্রয়মূল্য ১৪০-১৪২ টাকা ও বিক্রয়মূল্য ১৪৪-১৫০ টাকা, সাদা ডিম (ডজন)- ক্রয়মূল্য ১৩৫-১৩৭ টাকা ও বিক্রয়মূল্য ১৪১-১৪৮ টাকা, দেশী পেঁয়াজ (কেজি)- ক্রয়মূল্য ১৩৫-১৪০ টাকা ও বিক্রয়মূল্য ১৫০-১৬০ টাকা, এলসি পেঁয়াজ (কেজি)- ক্রয়মূল্য ১০৫-১১০ টাকা ও বিক্রয়মূল্য ১১৫-১২০ টাকা। এছাড়া দেশী রসুন (কেজি)- ক্রয়মূল্য ২০৫-২২০ টাকা ও বিক্রয়মূল্য ২২০-২৪০ টাকা, এলসি রসুন (কেজি)- ক্রয়মূল্য ২০৫-২১০ টাকা ও বিক্রয়মূল্য ২১০-২২০ টাকা। ব্রয়লার মুরগী (কেজি)- ক্রয়মূল্য ১৭০-১৮০ টাকা ও বিক্রয়মূল্য ১৮০-১৯০ টাকা, দেশী আলু (কেজি)- ক্রয়মূল্য ৫২-৫৩ টাকা ও বিক্রয়মূল্য ৫৫-৬০ টাকা, বোতলজাত ভোজ্য তেল (লিটার)- ক্রয়মূল্য ১৬২-১৬৩ টাকা ও বিক্রয়মূল্য ১৬৫-১৬৭ টাকা, খোলা ভোজ্য তেল (লিটার)- ক্রয়মূল্য ১৫৭-১৫৯ টাকা ও বিক্রয়মূল্য ১৬২-১৬৪ টাকা। কাঁচামরিচ (কেজি)- ক্রয়মূল্য ১০০-১২০ টাকা ও বিক্রয়মূল্য ১২০-১৪০ টাকা,
করলা (কেজি)- ক্রয়মূল্য ৫৭-৬১ টাকা ও বিক্রয়মূল্য ৬৫-৭০ টাকা, পেঁপে (কেজি)- ক্রয়মূল্য ২৬-২৭ টাকা ও বিক্রয়মূল্য ৩০-৩৫ টাকা, ঢেড়স (কেজি)- ক্রয়মূল্য ৪২-৪৫ টাকা ও বিক্রয়মূল্য ৫৫ টাকা, পটল (কেজি)- ক্রয়মূল্য ৪৪-৪৫ টাকা ও বিক্রয়মূল্য ৫০ টাকা এবং শসা (কেজি)- ক্রয়মূল্য ২৮-৩১ টাকা ও বিক্রয়মূল্য ৩০-৪০ টাকা।
এছাড়া প্যাকেট চিনি (কেজি)- ক্রয়মূল্য ১২৮ টাকা ও বিক্রয়মূল্য ১৩৫ টাকা, খোলা চিনি (কেজি)- ক্রয়মূল্য ১২৫-১২৮টাকা ও বিক্রয়মূল্য ১৩০-১৩২ টাকা, এলপিজি গ্যাস (সিলিন্ডার)- ক্রয়মূল্য ১৪৪০-১৪৬০ টাকা ও বিক্রয়মূল্য ১৪৮০-১৫২০ টাকা, সরু চাল (কেজি)- ক্রয়মূল্য ৬৭-৬৯ টাকা ও বিক্রয়মূল্য ৭০-৭৪ টাকা, মাঝারি চাল(কেজি)- ক্রয়মূল্য ৬০-৬২ টাকা ও বিক্রয়মূল্য ৬৩-৬৫ টাকা, মোটা চাল (কেজি)- ক্রয়মূল্য ৪৮-৫২ টাকা ও বিক্রয়মূল্য ৫০-৫৮ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
বাজারে পেঁয়াজের দাম অনেক বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এ জেলায় সকল পেঁয়াজ আসে পাবনা, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া অঞ্চল থেকে। সেখান থেকেই বেশি দামে পেঁয়াজ আসছে, তাই স্থানীয় পর্যায়ে পেঁয়াজের দাম কমানো সম্ভবপর নয়। কাঁচা মরিচের দাম অনেকটা কমেছে।
তদারকিকালে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আরিফুল ইসলাম পরিচালিত অভিযানে মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করায় এবং ক্রয় ভাউচার প্রদর্শন করতে না পারায় হাশেম স্টোর ও ভাই ভাই ট্রেডার্স নামে ২টি প্রতিষ্ঠানকে ৯ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ করা হয়। এদিন, বিসিক শিল্প নগরীতে অবস্থিত তাজ কোল্ড স্টোরেজের আলুর মজুদ পরিস্থিতি যাচাই করা হয়।
এদিকে, এদিন দুপুরে দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহনের দাবিতে শেরপুর শহরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহর প্রদক্ষিণ করেছে।