শ্রীবরদীর গোসাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশিকের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দূর্নীতির অভিযোগ।

doinikjamalpurbarta

নিজস্ব প্রতিনিধি: শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার ৫ নং গোসাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের বিতর্কিত ও বহুল আলোচিত চেয়ারম্যান ও স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহ জামাল ইসলাম আশিকের বিরুদ্ধে ট্যাক্সের টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ, একই প্রকল্প দুইবার বাস্তবায়ন করার নামে সরকারি তহবিল থেকে অর্থ উত্তোলন, ইউনিয়ন উন্নয়ন সহায়তা (বিবিজি) প্রকল্পের কাজ না করেই বিল উত্তোলন করার অভিযোগ উঠেছে।

গোসাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের একাধিক ইউপি সদস্যের অভিযোগ চেয়ারম্যান আশিক ও ইউপি সচিব মনোয়ার হোসেন যোগসাজসে বিগত দিনেও বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে হরিলুট করেছেন ।

১ নং প্যানেল চেয়ারম্যান ও ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আজহার আলী জানায়, ইউপি চেয়ারম্যান আশিক ও সচিব মনোয়ার হোসেন ইউনিয়নে বসবাসরত বাসিন্দাদের কাছে ট্যাক্সের টাকা তুলে ব্যাংকে জমা না দিয়ে তা আত্মসাৎ করেছেন। ২০২২- ২০২৩ অর্থবছরে আমার ওয়ার্ডে গোসাইপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রাস্তা সংলগ্ন সীমানা প্রাচীর নির্মাণে অনিয়ম করেছেন। যথা তদন্ত করলে দুর্নীতির সঠিক তথ্য উঠে আসবে।

স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর করের ১% খাতের বরাদ্দকৃত এক লক্ষ ১০ হাজার টাকা তিনি উত্তোলন করেন।

ইউনিয়ন পরিষদের ছয়টি জানালা নির্মাণ ও চেয়ারম্যানের জন্য চেয়ার সরবরাহ ও বাথরুমের সেপটিক ট্যাঙ্কি নির্মাণের জন্য অথচ এর আগেই অন্য একটি প্রকল্পের মাধ্যমে কাজগুলো বাস্তবায়ন করা হয়।

ফলে একই কাজ দুবার দেখিয়ে তিনি বিল উত্তোলন করেন। চেয়ারম্যান ও সচিব দুজনে মিলে প্রকল্পের অর্থ গুলো আত্মসাৎ করেছেন।

ভারেরা গ্রামের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন,ইউপি চেয়ারম্যান আশিকের অনিয়ম দুর্নীতির কারণে আজ ইউনিয়ন বাসি তার অপসরণের দাবি তুলেছেন।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তিনি প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে লুটপাট করেছেন। বালিয়া চন্ডী গ্রামের রুহুল আমিন বলেন, বিগত সময়ে একক আধিপত্য বিস্তার করে গোসাইপুর ইউনিয়ন পরিষদকে পারিবারিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে চেয়ারম্যান আশিক। তার স্ত্রী, ছেলে, ভাতিজা ও আত্মীয়-স্বজনরা ইউনিয়ন পরিষদের নিয়ন্ত্রণ করেছেন।

গোসাইপুর গ্রামের মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান আশিক কর্তৃক বাস্তবায়িত সকল প্রকল্পসমূহে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে, দুর্নীতি দমন কমিশন( দুদক) কতৃক নিরপেক্ষ তদন্ত করলেই অনিয়ম দুর্নীতির তথ্য পাওয়া যাবে।

স্থানীয় একটি সূত্র‍ জানায়, ২০২৩ -২০২৪ অর্থবছরে ইউনিয়ন উন্নয়ন সহায়তা (বিবিজি) প্রকল্পের অধীনে এক লক্ষ টাকার বিপরীতে ১ নং ওয়ার্ডের গিলাগাছা মোল্লার দোকান সংলগ্ন রাস্তায় ইউডেন নির্মাণের একটি প্রকল্প দাখিল করেন ইউপি চেয়ারম্যান।

অথচ প্রকল্প এলাকায় গিয়ে দেখা যায় কোন ইউডেন নির্মাণ করা হয়নি সেখানে। স্থানীয় ইউপি সদস্য খলিলুর রহমান বাদশাও জানেনা প্রকল্প সম্পর্কে।

তিনি জানায়, গিলাগাছা মোল্লার দোকানের পাশে কোন ইউডেন নির্মাণ করা হয়নি, আর এ প্রকল্প সম্পর্কের আমি কিছুই জানিনা, তবে শুনেছি এখানে প্রকল্প দেয়া হয়েছে।

২ নং ওয়ার্ডের মাটিয়াকুড়া লক্ষ্মীপুর মকবুলের বাড়ি সংলগ্ন রাস্তায় ইউডেন নির্মাণের বিপরীতে এক লক্ষ টাকার প্রকল্প দাখিল করেন ইউপি চেয়ারম্যান অথচ এ প্রকল্প সম্পর্কে কিছু জানেন না ২ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য সাজু মিয়া।

তিনি জানায়, এ প্রকল্প সম্পর্কে আমি অবগত নয়। বর্তমানে বেশ কিছুদিন যাবৎ চেয়ারম্যান পরিষদে না এসে ঢাকায় অবস্থান করছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ কিভাবে প্রকল্প দাখিল করে কাজ না করেই বিল উত্তোলন করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান।

এ বিষয়ে ইউপি সচিব মনোয়ার হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, চেয়ারম্যান ব্যতীত কোন তথ্য আমি কাউকে দিতে পারব না। প্রকল্পগুলো চেয়ারম্যান বাস্তবায়ন করেন তিনি ভালো বলতে পারবেন কোনটা বাস্তবায়ন হয়েছে।

বর্তমানে চেয়ারম্যান পরিষদ আসছে না। তিনি আসলে বিস্তারিত তথ্য আপনারা পাবেন। এ প্রসঙ্গে ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগের জন্য কয়েকদিন ইউনিয়ন পরিষদে গিয়েও তার দেখা পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে ইউপি সচিব মনোয়ার হোসেনের ফোন দিয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন আমি সাময়িক অসুবিধার জন্য বাইরে আছি, সন্ধ্যার পর বিস্তারিত তথ্য আপনাদের দিবো।

শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ জাবের আহম্মেদের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি।

SHARES

ফেসবুকে অনুসরণ করুন

আরো পোস্টঃ