Search
Close this search box.

রৌমারী খাদ্যগুদামে ধান সংগ্রহে ব্যাপক অনিয়ম।

doinikjamalpurbarta

এমদাদুল হক, রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি :

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে চলতি বোরো মৌসুমে সরকারি খাদ্যগুদামে ধান ক্রয়ে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। খাদ্যগুদাম কর্মকর্তাদের নির্দিষ্ট সিন্ডিকেটের অংশ মধ্যস্বত্বভোগীরা ধান ক্রয় করছে।

এতে করে ধান উৎপাদনকারী প্রকৃত কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। খাদ্যগুদামের অসাধু কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় স্থানীয় ১০-১৫ জন মধ্যস্বত্বভোগীর সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট তাদের মাধ্যমে ক্রয় করা হয় এসব ধান। সরেজমিনে গিয়ে এসব তথ্য পাওয়া যায়।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, নামে বেনামে ধান ক্রয় এর আবেদন দেখানো হয়। আসলে প্রকৃত কৃষকরা আবেদনই করেনি। কৃষকের ভোটার আইডি কার্ড ব্যবহার করে আবেদন করেন এ অসাধুচক্র ।

লটারিতে দেখা গেছে প্রায় অধিকাংশ নামই অকৃষক। ধান ক্রয় লটারি কবে হবে, কি ভাবে হবে, কোনো প্রকার প্রচার প্রচারণা ছাড়াই নেয়া হচ্ছে ধান। তথ্য যাছাইয়ে দেখা গেছে।

সিন্ডিকেটের মুল হুতারা এসব ভুয়া নাম ও মোবাইল নম্বরে আবেদন দেখিয়ে এসব নামে ধান গুদাম কর্মকর্তার সাথে জোগসাজস করে ধান দিয়ে থাকেন।

 

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বোর মৌসুমে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৯ শত ৬৬ মেট্রিক টন এর স্থানে অর্জন হয় ৬ শত ২১ মেট্রিক টন।

সিদ্ধ চাল মূল ও অতিরিক্তসহ ১ শত ১০ এর স্থানে ১০৪ মেট্রিক টন সংগ্রহ। আতব চাউল ১ শত ৩০ এর স্থানে ৭০ মেট্রিক টন সংগ্রহ হয়। উদ্বোধন করা হয়েছে ২২ মে।

ধান, চাউল সংগ্রহের সময় শেষ হয় ৩১ আগস্ট। সরকারি মূল্য অনুযায়ী প্রতি মন ধান ১২ শত ৮০ টাকা। একজন কৃষক ৩ টন ধান দিতে পারবে। উপজেলা থেকে লটারির মাধ্যমে ৩ শত ২২ জন কৃষককে নির্বাচিত করা হয়েছে।

স্থানীয় মিজানুর রহমান নামের এক বস্তা ব্যবসায়ী সাথে কথা হলে তিনি জানান, খাদ্যগুদাম ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ রৌমারীতে যোগদানের পরে আমাকে ডেকে নিয়ে বস্তা বিক্রির কথা বলেন।

তার পর থেকে নিয়মিত ভাবে চলছে বস্তা কেনা। হঠাৎ একদিন ২০ হাজার টাকা অগ্রিম নেন সেই মাল চাইতে গেলে অস্বীকার জানান। এই টাকা চাইতে গেলে মামলাসহ নানা প্রকার হুমকি দেন আমাকে। পরে স্থানীয় লোক জনের চাপে সামান্য কিছু টাকা দিলেও অধিকাংশ টাকা আটকে রাখেন।

খেওয়ারচর গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম, ধান সংগ্রহ তালিকায় নাম থাকলেও ঘুষ না দেওয়ায় ধান নিতে গড়িমশি করেন।

উপজেলার আতাহার আলী নামের একজন কৃষক জানান, টনের পর টন ধান আমার ঘরে পড়ে থাকে। আমি গুদামে ধান দিবো বলে অপেক্ষা করছি হঠাৎ শুনি লটারি হয়েছে।

কি ভাবে এসব করল তা কোনো ভাবে জানলাম না এটা খুবই দুঃখজনক। এখানে বড় সিন্ডিকেট আছে ধান দেওয়া মুশকিল।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে রৌমারী খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, এখানে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান নেওয়া হচ্ছে। কোনো সিন্ডিকেট নেই। উপজেলায় চাল কল গুলো অবস্থা খারাপ তবে সংস্কারের দরকার।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা হাসনাত মোহাম্মদ মিজানুর রহমান অভিযোগের বিষয়ে মোবাইল ফোনে একাধিক বার কথা বলা চেষ্ঠা করেও সম্ভব হয়নি।

উপজেলা খাদ্যশস্য সংগ্রহ ও মনিটরিং কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী আনিসুল ইসলাম সাথে কথা হলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, এব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইন গত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

SHARES

ফেসবুকে অনুসরণ করুন

আরো পোস্টঃ