নিজস্ব প্রতিবেদক দৈনিক জামালপুর বার্তা :গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে জামালপুর সরিষাবাড়ী অনুষ্ঠিত হয়েছে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা।
উপজেলার ভাটারা ইউনিয়ন ও মাদারগঞ্জ সিদুলী বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে কৃষ্টপুর ব্রীজ সংলগ্ন ঝিনাই নদীতে এ খেলার আয়োজন করা হয়।
গত দুইদিনে এতে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে বাহারি রঙের প্রায় ১২টি নৌকা অংশ নেয়। নৌকা বাইচ দেখতে নদীর দুই পাড়ে হাজার হাজার নারী ও পুরুষ প্রতিযোগিতা উপভোগ করেন।
নৌকা বাইচ উপলক্ষে এলাকায় বসেছে মেলা। মেলায় দোকানদাররা বাহারী ধরনের পসরা সাজিয়ে বসেছে।
ঝিনাই নদীর দুই তীরে দুপুরের পর থেকেই মানুষের ভিড়। নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা দেখতে শহরের পাশাপাশি গ্রামের মানুষও এসেছে।
২৪ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টায় শুরু হয় নৌকা বাইচ। বৈঠার ছলাৎ ছলাৎ শব্দ আর বাদ্য যন্ত্রের তালে তালে জারি আর সারি গান গেলে মাঝি মাল্লারা প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। এসময় হাজারো মানুষ নদীর দুই তীরে দাড়িয়ে নেচে গেয়ে উল্লাস করে প্রতিযোগীদের উৎসাহ দেয়।
প্রতিয়োগিতায় অংশ নেওয়া নৌকাগুলো হলো- সোনার তরী, হিরার তরী, বাংলার সম্রাট, রকেট, একতারা, পঙ্খী রাজ, সুগন্ধা, ধানসিঁড়ি, বিজয় এক্সপ্রেস, পাংখাসহ ১২ টি নৌকা এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।
সৈয়দপুর বছির উদ্দিন স্কুল এলাকা নদীপাড় থেকে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে কৃষ্টপুর ব্রীজ পাড় পর্যন্ত গিয়ে শেষ হয়।
প্রতিযোগিতায় প্রথম দিন বাহারি রঙের ১২টি নৌকা অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে থেকে বাছাই করে চারটি নৌকাকে চূড়ান্ত পর্বের জন্য মনোনীত করা হয়। খেলাটি দেখতে সকাল থেকে বহু দূরদূরান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয়।
নৌকা বাইচ দেখতে আসা সাধারণ দর্শকরা বলেন, দীর্ঘদিন পরে হলেও এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করায় খুশি তারা। সুস্থ বিনোদনের জন্য হলেও প্রতি বছর এ খেলার আয়োজনের দাবি তাদের।
বাবা-মায়ের সাথে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা দেখতে আসা সৈয়দপুর বছির উদ্দিন স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী নাজমুল ইসলাম বলেন, আব্বু-আম্মুর সাথে নৌকা বাইচ দেখতে এসেছি। অনেক আনন্দ উপভোগ করছি। এখানে মেলার আয়োজন ছিল। অনেক কিছু কেনাকাটাও করেছি।
জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া নৌকার এক মালিক জানান, বাপ দাদার ঐতিহ্যকে ধরে রেখে এখনো তারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নৌকা বাইচের খবর পেলে ছুটে যান অংশ নেন নৌকা বাইচে। অনেক মানুষের সমাগম হয়। মানুষ বিনোদন করতে পারে এটাই তাদের অর্জন বলে জানান।
আয়োজক কমিটির পরিচালক আব্দুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যগুলো নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে এ আয়োজন।
প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বাহারি রঙের ১২টি বাইছা নৌকা অংশ নেয়। উৎসুক জনতা নৌকা বাইচ দেখে খুবই আনন্দিত হয়েছে। মানুষকে আনন্দ দিতে প্রতিবছর নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে বলেও তারা জানান।