শেরপুর জেলা প্রতিনিধি: শেরপুরের ঐতিহ্যবাহী স্কুল শেরপুর সরকারি ভিক্টোরিয়া একাডেমীর খেলার মাঠ বন্ধ করে ভবন নির্মাণের প্রতিবাদে ফুসে উঠেছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। এদিকে শিক্ষকদের ভিতরে বিষয়টি নিয়ে মাঠ বন্ধ না করার প্রস্তাব করলে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর এর নির্বাহী প্রকৌশলী জয়িতা অধিকারীর বিরুদ্ধে এক শিক্ষককে মামলা দেওয়ার হুমকির অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে শত বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী শেরপুর সরকারি ভিক্টোরিয়া একাডেমীর একটি ভবন নির্মাণের জন্য ৫ ই আগস্ট এর আগে গত ৩০ এপ্রিল সাবেক সরকারের সময় প্রায় সাড়ে ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি ভবনের নির্মাণে দরপত্র আহবান করে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর। কাজটি পায় মেসার্স: মিরন এন্টারপ্রাইজ। সাবেক সরকারের মদদপুষ্ট ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজটি বাস্তবায়নে কার্যাদেশ প্রদান করলেও সরকারি আদেশ অমান্য করে স্কুল ভবনের সামনে একমাত্র খেলার মাঠটি বন্ধ করে সেখানে ভবন নির্মাণের বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক সহ অন্যান্য শিক্ষকগণ জানতে পারেনি। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে ভবনের সাইট বোঝাতে গেলে বিষয়টি নিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের মধ্যে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে।
সময় স্কুল শিক্ষার্থীরা মাঠ বন্ধ করে স্কুলের ভবন নির্মাণের বিরুদ্ধে গত ১০ নভেম্বর (রোববার) সকালে মিছিল করে। বিষয়টি নিয়ে প্রধান শিক্ষক নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগ করে তারা স্কুল মাঠে ভবন না করে বিকল্প জায়গায় ভবন নির্মাণের অনুরোধ করলেও তারা কোনভাবেই সাইট পরিবর্তন করতে রাজি হয়নি বরং ওই স্কুলের কামরুল ইসলাম নামের এক শিক্ষককে কাজে-বাধা প্রদানের অভিযোগে মামলা জড়ানোর হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষক । বিষয়টি নিয়ে সংবাদকর্মী ও স্কুলের কিছু অভিভাবক এবং প্রধান শিক্ষক আনিসা বেগম শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে জানতে গেলে বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী ভিন্ন ব্যাখ্যা প্রদান করেন। এ সময় কিছু অভিভাবক প্রধান প্রকৌশলীর অফিস কক্ষে ফ্যাসিস্ট সরকারের বেশ কিছু বই তার কক্ষে দেখতে পেয়ে তাকে ঘিরে ধরেন। এ সময় অভিভাবকরা নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে ফ্যাসিস্ট সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নের অভিযোগ আনেন এবং তার সরকারি গাড়ি তার স্বামী ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করেন এমন অভিযোগ তুললে তিনি তা অস্বীকার করেন।
এ বিষয়ে শেরপুর সরকারি ভিক্টোরিয়া একাডেমীর প্রধান শিক্ষক আনিসা বেগম বলেন, একমাত্র খেলার মাঠ বন্ধ করে ভবন নির্মাণ আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। পরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নির্বাহী প্রকৌশলী জয়িতা অধিকারী জানান, তিনি কোন শিক্ষককে মামলার ভয় দেখাননি। এছাড়া খেলার মাঠ বন্ধ করে জোড় পূর্বক ভবন নির্মাণ করছেন এটা ঠিক না। আর বিগত সরকারের আমলে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপর লেখা সংগ্রহহিত বই গুলো সরকারি নির্দেশনা থাকার পরও তার সরিয়ে রাখার খেয়াল ছিলনা বলে তিনি জানান।